পবিত্র কোরআনুল কারিমের সবচেয়ে বড় সূরা ‘সূরা আল-বাক্বারার ২৫৫ নং আয়াত’ হচ্ছে আয়াতুল কুরসি। এ আয়াতটিতে ১০টি বাক্য রয়েছে। যার প্রত্যেকটিতে আল্লাহর ক্ষমতার কথা বর্ণনা করা হয়েছে। আয়াতুল কুরসী পাঠ করলে মানব জাতির অনেক কল্যাণ সাধিত হয়, বিভিন্ন বিপদ আপদ থেকে বাঁচা যায়।
এ সূরার রয়েছে অনেক ফজিলত। একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজরত ওবাই ইবনে কা’বকে জিজ্ঞেস করলেন সবচেয়ে ফজিলত ও গুরুত্বপূর্ণ আয়াত কোনটি? ওবাই ইবনে কা’ব আরজ করলেন, সেটি হচ্ছে আয়াতুল কুরসি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা সমর্থন করলেন এবং বললেন, হে আবুল মানজার! তোমাকে এ উত্তম জ্ঞানের জন্য ধন্যবাদ। (মুসনাদে আহমদ)
আয়াতুল কুরসীর ফজিলত ও গুরুত্ব
⚫ হজরত আলী (রা:) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি- যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর আয়াতুল কুরসি নিয়মিত পড়ে, তার জান্নাতে প্রবেশে কেবল মৃত্যুই অন্তরায় হয়ে আছে। যে ব্যক্তি এ আয়াতটি বিছানায় শয়নের সময় পড়বে আল্লাহ তার ঘরে, প্রতিবেশীর ঘরে এবং আশপাশের সব ঘরে শান্তি বজায় রাখবেন। [সুনানে বাইহাকী]
⚫ আয়তুল
কুরসি ঘুমানোর সময় পাঠ করলে সকাল
পর্যন্ত তার হেফাজতের জন্য
একজন ফেরেশতা পাহারায় নিযুক্ত থাকে। যাতে শয়তান তার
নিকটবর্তী হতে না পারে।
(বুখারি)
⚫ আবূ
হুরাইরাহ (রাযিয়াল্লা-হু ‘আনহু) বলেছেন,
রাসূলে কারীম (সা.) ইরশাদ করেছেন,
সূরা আল বাক্বারায় এমন একটি
আয়াত রয়েছে যা কুরআনের অন্য
সব আয়াতের সর্দার বা নেতা। সে
আয়াতটি (আয়াতুল কুরসি) যে ঘরে পড়া
হয়, তা থেকে শয়তান
বেরিয়ে যায়। [তাফসীর মা’ আরেফুল কুরআন-১ম খণ্ড, পৃ:
৬৭৬]
আরবীতে:
اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ۚ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ ۚ لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِندَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ ۖ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ [٢:٢٥٥]
উচ্চারন: আল্লাহু লা
ইলাহা ইল্লা হুয়াল
হাইয়্যুল ক্বইয়্যুমু লা
তা খুজুহু সিনাত্যু
ওয়ালা নাউম। লাহু
মা ফিছছামা ওয়াতি
ওয়ামা ফিল
আরদ্। মান
যাল্লাযী ইয়াস ফায়ু
ইন দাহু ইল্লা
বি ইজনিহি ইয়া
লামু মা
বাইনা আইদিহিম ওয়ামা
খল ফাহুম ওয়ালা
ইউ হিতুনা বিশাই
ইম্ মিন
ইল্ মিহি ইল্লা
বিমা সাআ
ওয়াসিয়া কুরসিইউ হুস
ছামা ওয়াতি ওয়াল
আরদ্ ওয়ালা ইয়া
উদুহু হিফজুহুমা ওয়াহুয়াল
আলিয়্যূল আজীম।
অনুবাদ: আল্লাহ ছাড়া অন্য
কোন উপাস্য নেই,
তিনি জীবিত, সবকিছুর
ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও
স্পর্শ করতে পারে
না এবং
নিদ্রাও নয়।
আসমান ও
যমীনে যা
কিছু রয়েছে, সবই
তাঁর। কে
আছ এমন,
যে সুপারিশ করবে
তাঁর কাছে তাঁর
অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির
সামনে কিংবা পিছনে
যা কিছু রয়েছে
সে সবই
তিনি জানেন। তাঁর
জ্ঞানসীমা থেকে তারা
কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত
করতে পারে না,
কিন্তু যতটুকু তিনি
ইচ্ছা করেন। তাঁর
সিংহাসন সমস্ত আসমান
ও যমীনকে পরিবেষ্টিত
করে আছে। আর
সেগুলোকে ধারণ করা
তাঁর পক্ষে কঠিন
নয়। তিনিই সর্বোচ্চ
এবং সর্বাপেক্ষা মহান। [২:২৫৫ ]
আয়াতুল কুরসি পাঠ করার কারণে বা যারা আমল করে তাদের থেকে শয়তান দূরে থাকে এবং তাদের উপর কোন প্রকার যাদু কাজ করে না। বিভিন্ন বিপদ আপদ থেকে বেঁচে থাকে।